ইসলামে বাল্যবিবাহের রুপরেখা

ইসলামে শিশু বিবাহ হালাল বলা মাত্র একদল নাস্তিক ভেবে বসে যে মুসলিমরা সবাই গ্রামকে গ্রাম শহরকে শহর সবাই শিশু বিবাহ করে এবং ইসলামের ইতিহাসে সকল মনীষীরা শশিু বিবাহ করেছে ।এবং তারা এটাও বুঝাতে চায় যে মুসলিমদের কাছে শিশু বিবাহ একটি প্রতিদিনের কাজ ।আসলে বিষয়টি একেবারেই এরকম নয় । তাহলে বিষয়টি কেমন? আসুন আলোচনা করি ।

ইসলামে শিশু বিবাহ অবশ্যই হালাল:

ইসলামে শিশু বিবাহ হালাল করলেও ব্যাপক উৎসাহ দেওয়া হয় নাই এবং শিশু বিবাহ করলে এই এই ফজিলত তাও আলোচনা করা হয় নাই ।মুসলিম সমাজে ও ইতিহাসেও  এর ব্যাপকতা পাওয়া যায় না ।আপনার সমাজে মহল্লায় মুসলিমদের দিকে তাকান দেখেন এর ব্যাপক প্রচলন পাবেনন না ।  এটাকে শুধু হালাল করা হয়েছে মাত্র এবং হালাল করার পিছনে একটা গুরুত্বপুর্ণ কারণ রয়েছে আশাকরি কারণ গুলো বিস্তারিত  আলোচনা করলে পঠকগন পরিস্কার হবেন। বিস্তারিত আলোচনার পুর্বে শিশু বিবাহ নিয়ে একটি গনিত দেখে নেই।

 ইসলামে শিশু বিবাহের  ৪ গনিত:

১/ছেলে শিশু +মেয়ে শিশু = শিশু বিবাহ

২/মেয়ে শিশু +ছেলে শিশু = শিশু বিবাহ

৩/মেয়ে বড় +ছেলে শিশু= শিশু বিবাহ

৪/মেয়ে শিশু + ছেলে বড়=শিশু বিবাহ

নাস্তিকদের কাছে প্রথম তিন প্রকার নিয়ে তেমন আপত্তি না থাকলেও ৪ নাম্বার প্রকার নিয়ে তাদের রয়েছে অনেক অনেক আপত্তি কিন্তু আমরা একটা জবাব দিব যার মাধ্যমে আপনারা যারা সত্য খুজে বেরান তারা  পুরো বিষয়টি বুঝতে পারবেন ইনশাল্লাহ।

ছোট সময় শিশুরা কি খাবার খায় এই সিদ্ধান্ত কে গ্রহন করেন? শিশুরা কি পোষাক পরিধান করবে সে সিদ্ধান্ত কে গ্রহন করেন ?শিশুরা কোন বই পড়বেন সেই সিদ্ধান্ত কে গ্রহণ করেন? সকল প্রশ্নের উত্তর হলো শিশুর অভিভাবক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন ।  এতগুলো সিদ্ধান্ত অভিভাবক গ্রহন করলে সমস্যা হয়না শিশুর অধিকার হরণ হয় না ।  শুধু  শিশুকে বিবাহ দিলে সমস্যা?শিশুর মুক্ত চিন্তার অধিকার কি কোন অভিভাবক দেন?কোন শিশু যদি মুক্ত চিন্তায়  আগুনে হাত দিতে লাগে কোন সুস্থ অভিভাবক কি তাকে হাত দিতে দিবেন? দিবেন না তার মানে দারায়  শিশুটি  বড় না হওয়া পর্যন্ত অভিভাবক নিজে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন । আর শিশুটি বড় হওয়ার সাথে সাথে তার সিদ্ধান্ত সে নিযে গ্রহন করবে। তেমনি অভিভাবক  শিশুকে বিবাহ দিতে পারবে । সেই শিশু বড় হলে তার পছন্দ হলে বিয়ে রাখবে পছন্দ না হলে রাখবে না।  শিশুকে বিয়ে দিলেও তার সাথে সহবাস করা বৈধ নয় তবে শিশু বড় হলে তারা এই বিবাহ রাখতে পারবে  । অনেকেই মনে করে শিশু বিয়ে মানে শিশুর সাথে সহবাস করা আসলে বিষয়টি এরকম নয় । শিশুর সাথে সহবাস করা হারাম । শিশু বিবাহ মুলত একটি ছেলে ও মেয়ে  অভিভাবকদের একটি চুক্তিে এখানে সহবাস নেই এই বিষয় আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।  তাছাড়া শিশুকে বিবাহ দিলেও তার অধিকার হরন হচ্ছেনা কারণ সেই শিশু বড় হলে তার পছন্দ হলে বিয়ে রাখবে পছন্দ না হলে পুরষ হলে তালাক দিতে ও নারী হলে তালাক নিতে পারবে । এখানে প্রশ্ন আসতে পারে শিশুর অভিভাবক যদি খারাপ উদ্দেশ্যে বিবাহ দিয়ে থাকে আথবা শিশুর অভিভাবক খারাপ হয় তাহলে শিশুটির জন্য বিবাহটি  অকল্যাণ কর হলো। এর জবাবে আমরা বলবো যে কোন আভিভাবক যদি খারাপ উদ্দেশ্যে বিবাহ দেয় এবং তা প্রমানিত হয় তাহলে সেই বিবাহ জায়েয নয় প্রমান:রদ্দুল মুহতার ৪/১৭১ ও ১৭২

রদ্দুল মুহতার 4/172 কিতাবুন্নিকাহ বাবুল ওলি

অনুবাদ: যদি অভিভাবক খারাপ উদ্দেশ্যে(সন্তান বা কাওকে) বিবাহ দেয়, এবং তার খারাপ উদ্দেশ্য জ্ঞাত হয়, তাহলে সেই বিবাহ সর্বসম্মতিক্রমে বৈধ নয় বা শুদ্ধ নয়,

 

একজন ভালো বাবা বা ভালো  অভিভাবক সবসময় তার সন্তানকে ভালো বিয়েই দিতে চাইবে তাই ভালো  অভিভাবকের বিয়ে দেওয়ার অবশ্যই যৌক্তিক

আমাদের জেনে নেওয়া দরকার যে সমাজে অনেক ইয়াতিম বাচ্চা আছে যাদের দেখাশোনা বা সম্পদ হেফাজতের জন্য লোকের প্রয়োজন হয় । এই কাজে কাওকে নিয়গ দিলে বেতন দিতে হয় তার পরেও সম্পদ হেফাজত করতে পারে না । আর ইসলামে ইয়াতিমের সম্পদ হেফাজতের ব্যাপারে ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে আল্লাহ তাআলা বলেন:

﴿إِنَّ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ أَمْوَالَ الْيَتَامَىٰ ظُلْمًا إِنَّمَا يَأْكُلُونَ فِي بُطُونِهِمْ نَارًا ۖ وَسَيَصْلَوْنَ سَعِيرًا﴾
النساء: 10]

যারা এতীমদের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায়, তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভর্তি করেছে এবং সত্ত্বরই তারা অগ্নিতে প্রবেশ করবে। [সূরা নিসা: 10]

ফাতাওয়ার কিতাবে ইয়তিম কাকে বলা হয় তা নিম্নে দেওয়া হলো :

لدر المختار وحاشیہ ابن عابدین میں ہے:

“واليتيم اسم لمن مات أبوه قبل الحلم. قال – صلى الله عليه وسلم – «‌لا ‌يتم ‌بعد ‌البلوغ».”

(کتاب الوصایا،‌‌باب الوصية للأقارب وغيرهم،ج6،ص688،ط؛سعید)

ইসলামী পরিভাষায়, যে শিশুর পিতা ইন্তেকাল করেছেন, শুধু তাকে এতিম বলা হয় বালেগ হওয়ার পরে আর ইয়াতিম বলা হবে না।

প্রশ্ন আসতে পারে কেন ইয়াতিমের সম্পদের এতো গুরুত্ব দেওয়া হলো ?এর উত্তরে আমরা বলবো যে জার ফ্যামেলিতে অভিভাবক মারা যায় তাদের ভবিষ্যৎ কতটা অনিশ্চিত । তাদের পড়ালেখা পোশাক তাদের আবদার কোন কিছুর আসলে নিশ্চয়তা থাকে না । তাই তাদের অনিশ্চত ভবিষ্যৎ কে নিশ্চয়তার জন্য প্রয়োজন একজন গুরুত্বপুর্ন অভিভাবক । আর এই অভিভাবক জদি হয় সম্পর্কের মাধ্যমে তাহলে আরো সুন্দর হয় এরকম অনেক দিক বিবেচনা করে ইসলামের শিশু বিবাহের যুক্তিকতা প্রমানিত হয় । এখন অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন সম্পদ হেফাজতের জন্য কেন বিয়ে করতে হবে? আমি একজন মানবিক মানুষ হিসেবেই তাদের দাইত্ত নিব এর উত্তরে বলবো যে কেও যদি বিবাহ ছারাই দাইত্ত নেয় তবে ইসলাম সেই বিষয় উৎসাহ দিয়েছে।ইসলাম এটা বলছেনা যে শিশু বিবাহ করেই তার দাইত্ত নিতে হবে । আপনি চাইলে বিবাহ কইরেন না বিবাহ ছারাই দাইত্ত নেন তাতেও সমস্যা নেই । তবে কেও যদি বিবাহ করে দাইত্ত নিতে চায় এই সুযোগ ইসলাম দিয়েছে । এবার আসুন আমরা আলোচনা করি  শিশু বিবাহ ইসলামে কেন বৈধ করা হলো?

সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনায় শিশু বিবাহের যৌক্তিকতা নিম্নে দেওয়া হলো:

সংকট ১/আনেক সময় অভিভাবক অসুস্থ হয়ে পরে তার শিশু সন্তানের ভরণপোষণের অর্থ  সম্পদ থাকে না  তখন সেই শিশু সন্তান বিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয় যাতে তাকে লালন পালন করা হয় ।এবং বিয়ের মাধ্যমে একটা শুসম্পর্ক তৈরি হয়।

সংকট ২/অভিভাবক বৃদ্ধ হয়ে পরলে তার শিশু সন্তানের ভরণপোষণের অর্থ  সম্পদ থাকে না  তখন সেই শিশু সন্তান বিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয় যাতে তাকে লালন পালন করা হয় ।এবং বিয়ের মাধ্যমে একটা শুসম্পর্ক তৈরি হয়।

সংকট ৩/অভিভাবক দরিদ্র হওয়ার কারনে তার শিশু সন্তানের ভরণপোষণে ব্যার্থ হলে পিতামাতা তার শিশু সন্তানকে বিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে এই সংকট থেকে উঠে আসতে পারে।

সংকট ৪/অনেক সময় শিশু সন্তানের  পিতামাতা মারা যাওয়ার কারনে তার সম্পদ  দাদা বা অন্য অভিভাবক দেখাশোনা করতে ব্যর্থ হয়ে যায় তখন তারা বিবাহের মাধ্যমে তার সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করে । যাতে করে তাকে দেখাশোনা  তার পড়াশোনা সহ সকল কাজ সেই স্বামী বা স্ত্রী করতে পারে।

সংকট ৫/ফেতনা প্রচুর ছরিয়ে পরলে যেমন অনেক ছেলে মেয়েরা পালিয়ে বিয়ে করে এবং পরবর্তিতে তাদের সাংসারিক জিবনে তারা বিভিন্ন সমস্যায় পরে যায় এধরনের ফেতনার কারনে পিতামাতা আগেই বিয়ে দেওয়া বেশি ভালো মনে করেন।

সংকট ৬/পিতামাতা অনেক সময় মনে করে যে ভালো বিয়ে পাওয়া কঠিন তাই ছোট অবস্থায় বিয়ে দেওয়াকে বেশি ভালো মনে করেন । এবং মনে করেন ছোট অবস্থায়ে এই ধরনের ভালো বিয়ে যদি না দেই তাহলে পরবর্তিতে এমন ভালো  বিয়ে পাওয়া কঠিন হবে তাই শিশু অবস্থায়  বিয়ে দিওয়াকে কল্যানকর মনে করেন।

সংকট ৭/বর্তমানে দেখা যায় অনেক শিশু রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় যাদের দেখবাল করার কেও থাকে না তাদের যদি কেও বিয়ে করে তাতে তাদের একটা উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ হয় এবং সামাজিক পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে।

এই কারন ছারাও কোন পিতা তার শিশু সন্তানকে কল্যানার্থে ভাল বিয়ে দিলে সমস্যা দেখি না । শিশু বিবাহ হলেও তার সাথে সহবাস তো আর হচ্ছেনা উপযুক্ত হওয়ার পরেই সহবাস হচ্ছে।তাই শিশু বিবাহকে খারাপ মনে করার মাধ্যমে এই অসহায় শিশুদের   সংকটময় ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ।এর থেকে উত্তলনের জন্য শিশু বিবাহ বৈধ হওয়া প্রত্যেক যুক্তিবাদী মানুষ গ্রহণ করবে ।

ইসলামে শিশু বিবাহ বৈধ হলেও শিশুর সাথে সহবাস বৈধ নয়:

নাস্তিকদের অভিযোগ :

কোরআনের বিধান অনুসারে, সহবাসের পূর্বে তালাক দিলে ইদ্দতের বিধান নেই। শুরুতেই এই সম্পর্কিত আয়াতটি দেখে নিই সুরা ৩৩:৪৯

হে মুমিনগণ, যখন তোমরা মুমিন নারীদেরকে বিবাহ করবে অতঃপর তাদের সাথে সহবাসের পূর্বেই তালাক দিয়ে দেবে তবে তোমাদের জন্য তাদের কোন ইদ্দত নেই যা তোমরা গণনা করবে। সুতরাং তাদেরকে কিছু উপহার সামগ্রী প্রদান কর এবং সুন্দরভাবে তাদেরকে বিদায় দাও।

এবারে সুরা তালাকের ৪ নম্বর আয়াতটি পড়ি, যেখানে বলা আছে, যেসব স্ত্রী এখনো ঋতুর বয়সে পৌঁছে নি, তাদের ইদ্দত হবে তিনমাস

যে সব তালাকপ্রাপ্তারা বয়সের কারণে মাসিক থেকে নিরাশ হয়েছে তাদের ইদ্দতের ব্যাপারে যদি তোমরা সন্দিহান হও তাহলে তাদের মেয়াদ তিন মাস বলে গণ্য হবে। তেমনিভাবে যারা ছোট থাকার ফলে মাসিকের বয়সে উপনীত হয় নি তাদের ইদ্দতও তিন মাস। আর গর্ভবতীদের তালাক কিংবা স্বামীর মরণোত্তর ইদ্দত হলো সন্তান প্রসব। বস্তুতঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে তাঁকে ভয় করে তিনি তার সকল বিষয় ও সমস্যা সহজ করে দেন।

নাস্তিকদের  মুল অভিযোগ  :

তাহলে স্পষ্টতই বোঝা যায়, যারা ঋতুর বয়সে পৌঁছে নি, তাদের যেহেতু ইদ্দতের কথা বলা আছে, তাই অবশ্যই সহবাসের অনুমতিও দেয়া আছে। নইলে ইদ্দতের নির্দেশই থাকতো না। কারণ সহবাস ছাড়া তো ইদ্দতের প্রয়োজনই নেই।

আমাদের উত্তর:

আমাদের প্রথমে জানতে হবে বালেগ কাকে বলে:

ছেলে বা মেয়ের বালেগ  হবার মূল নিদর্শন বীর্যস্খলন হওয়া। এটির প্রকাশক অনেক কিছুই হতে পারে। যেমন

ছেলে মেয়েদের সেটি স্বপ্নদোষের মাধ্যমে প্রকাশিত হতে পারে।

ছেলেদের দাড়ি গোফ উঠা আর মেয়েদের স্তন বড় হওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে প্রকাশ পেতে পারে।

মেয়েদের হায়েজ আসা, গর্ভধারণ করা ইত্যাদির মাধ্যমেও বালেগ হওয়া সাব্যস্ত হয়।

وَإِذَا بَلَغَ الْأَطْفَالُ مِنكُمُ الْحُلُمَ [٢٤:٥٩

তোমাদের সন্তান-সন্ততিরা যখন বায়োঃপ্রাপ্ত হয়, [সূরা আননূর-৫৯]

এইতো গেল নিদর্শন হিসেবে বালেগ হওয়া নির্ধারণ করা। যা নির্ধারণ করা খুবই সহজ।

কিন্তু কথা হল, যদি নিদর্শন বুঝা না যায়,তাহলে বয়স হিসেবে কিভাবে বালেগ হওয়া নির্ধারণ করবে?

প্রাধান্য পাওয়া বক্তব্য হল, বালেগ হবার উপরোক্ত আলামতগুলো যদি কোন ছেলে বা মেয়ের মাঝে প্রকাশিত না হয়, তাহলে সন্তানের বয়স পনের বছর হলেই উক্ত ছেলে মেয়ে বালেগ হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে।

عن ابن عمر رضي الله عنهما أنه عُرِض على النبي صلى الله عليه وسلم يوم أُحدٍ وله أربع عشرة سنة فلم يُجِزْه، وعُرِض عليه يوم الخندق وله خمس عشرة سنة فأجازه.

ইবনে উমর রাঃ উহুদের জিহাদে অংশ নেবার অনুমতি চাইলেন, তখন তার বয়স ছিল চৌদ্দ বছর। রাসূল সাঃ তাকে অনুমতি প্রদান করেননি। কিন্তু খন্দকের জিহাদের অংশ নিতে অনুমতি চাইলে অনুমতি দেয়া হয়, তখন তার বয়স ছিল পনের বছর। [আলআহাদ ওয়ালমাছানী, হাদীস নং-৭৪৬]

বুঝা গেল, শরীয়তের মুকাল্লাফ হতে হলে আর কোন আলামত না থাকলে বয়স হিসেবে কমপক্ষে পনের বছর হতে হয়।

আমরা জানলাম বালেগ হওয়ার আলামত কিন্তু বালেগ হওয়ার আগে বা নাবালেগ দের ইসলামিক গবেষকগন তিন ভাগে ভাগ করেছেন

এমদাদুল ফতোয়া ৯ /২৩২ নম্বর পৃষ্ঠা

অনুবাদ:  নাবালেগ তিন প্রকারের এদের মধ্যে প্রথম (১) প্রকার তো হলো নাদান বা অবুঝ যে ভালো খারাপের পৃথক করতে পারে না একদমই তাদের জন্য পোশাক পরা না পড়া উভয় জায়েজ দ্বিতীয় (২) প্রকার হলো যারা মোটামুটি ভালো খারাপের পার্থক্য করতে পারে কিন্তু এখনো যে ব্যক্তি চাহিদার স্তরে উন্নীত হয়নি এদের নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢাকা আবশ্যক এর বাহিরে খোলা রাখলে সমস্যা নেই তিন(৩) নম্বর প্রকার যারা করিবুল বুলুগ বা বালেগের নিকটবর্তী   ( মারাহেক ) এরা মূলত প্রাপ্তবয়স্কের মতোই পূর্ণ সতর ঢাকা এদের জন্য ফরজ।

 

ইমদাদুল ফাতাওয়াতে ৩ নাম্বার (করিবুল বুলুগ বা মারাহেক ) যে প্রকারের কথা বলা হয়েছে এই প্রকারটাই আমাদের কাছে উক্ত বিষয়টি বোঝার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই ৩ নাম্বার প্রকারের  মেয়েদের সাথেই ইসলাম সহবাস করার অনুমতি দিয়েছে যেই মেয়েকে বা বালককে কারিবুল বুলুগ বা বালেগের নিকটবর্তী (মারাহেক ) বলে ।

ইসলামে কখন সহবাস করা যাবে এই বিষয় ইসলাম কি বলে? এই বিষয়টি আমরা জানবো ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবান্দ থেকে :ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবান্দ ৭/৫১৯

অনুবাদ:   পশ্ন: স্ত্রীর হায়েজ আসার পুর্বেই সহবাস করা যাবে কি না?

উত্তর: যখন স্ত্রী করিবুল বুলুগ ( বালেগের নিকটবর্তী ) হবে যদিও বালেগ না হয় তবুও তার সাথে সহবাস করা বৈধ।

 

আমরা ফাতাওয়ার কিতাব থেকে জানলাম বালেগের নিকটবর্তী হলে সেই মারাহেকার সাথে সহবাস করা যাবে কিন্তু আমাদের জানতে হবে মরাহেক কাকে বলে।

ফুকাহাদের পরিভাষায় করিবুল বুলুগ বা বালেগের নিকটবর্তী কে মারাহেক বলে। মারাহেক বা করিবুল বুলুগ কাকে বলে? আমরা ফিকহের পরিভাষার কিতাব থেকে দেখ আসি: কামুসুল ফিকহ ৫/৭৪ ও ৭৬ পৃষ্ঠা

অনুবাদ : মোরাহেকের অর্থ সাধারনত প্রাপ্তবয়স্ক হবার নিকটবর্তী সময় দ্বারা করা হয়ে থাকে, ফৈরাজ্যবাদী (راهق الغلام)(রহিকুল গুলাম) এর অর্থ লিখেন( قارب الحلم)(করিবুল হুলম) (বালিগের নিকটবর্তী বা যার শরীর স্বপ্নদোষ হওয়ার মত যোগ্য হয়েছে) হিসেবে আর আল্লামা শেখ মোস্তফা যরক্বা মারাহিকির বিশ্লেষণ এভাবে করেন, বালিগের সর্বনিম্ন থেকে সর্বোচ্চ বয়সের মধ্যবর্তী সময় হল মারাহেক,আর সুস্পষ্ট ভাবে জ্ঞাত হওয়া আবশ্যক বিষয় যে, মেয়েদের জন্য সর্বনিম্ন ৯ বছর এবং ছেলেদের জন্য সর্বনিম্ন 12 বছর, আর মেয়েদের জন্য সর্বোচ্চ ১৭ বছর আর ছেলেদের জন্য সর্বোচ্চ আঠারো বছর হলো মারাহেকের সময়, জমহুর ফুকাহা ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মোহাম্মদ এর নিকট বালেগল হওয়ার সর্বোচ্চ বয়স ১৫ এবং হানাফী মাযহাবের ফতোয়া এটার উপরই, তবে ১২ থেকে ১৫ বছর বয়স নির্ধারণ করার তাৎপর্য হলো বিভিন্ন অঞ্চল ভিত্তিক পরিবেশ ও আবহাওয়ার প্রভাব বালের হবার সাথে সম্পৃক্ত হবার কারনে ৷

 

করিবুল বুলুগ এর আলামত কি অনেকের প্রশ্ন জাগতে পারে আমরা উপরের কিতাব থেকে জানতে পারলাম বালেগের নিকটবর্তী সময়কে করিবুল বুলুগ বলে । বালেগের নিকটবর্তী সময় একজন মানুষের যেই ধরনের শারীরিক পরিবর্তন হয় এবং শরীরে যেই ধরনের আলামত প্রকাশ পায় সেই আলামত গুলোই সহবাসের উপযুক্ততার জন্য জন্য প্রযোজ্য হবে । তবে এসময় খেয়াল রাখতে হবে যেন সেই মেয়ের সহবসারে অনুপযুক্ততার কারনে কোন ক্ষতি না হয় এই বিষয় উম্মতের ইজমা হয়েছে আর ইজমার প্রসিদ্ধ নিয়ম হলো কোন এক সময় উম্মত একবার ইজমা হয়ে গেলে পরের কোন আলেম সেই ইজমা ভাংতে পারে না । তাই আমরা ইজমার প্রমানটি দেখে নেই। সহিহ বুখারির সবচেয়ে প্রাচীনতম ব্যাখ্যাগ্রন্থ ইবনে বাত্তাল রহ: এর শরহে সহিহিল বুখারীর ৭/১৭২ ও ১৭৩ পৃষ্ঠা

শরহু সহিহিল বুখারী লি ইবনে বাত্তাল ,7/186

অনুবাদ: ওলামাগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন পিতা-মাতা কর্তৃক ছোটদের কে বড়দের সাথে বিবাহ দেওয়া বৈধ ,যদিও সেই ছোট বাচ্চাটি দোলনায় থাকার বয়সের হয় ,(তবু বিয়ে দেয়া বৈধ) তবে তার সাথে সহবাসের জন্য সহবাসের উপযুক্ত হতে হবে,( সহবাসের উপযুক্ত হওয়া ছাড়া তার সাথে সহবাস বৈধ নয় )আর সহবাসের বৈধতার ব্যাপারটি, ব্যক্তির ভিন্নতায় হুকুমের অবস্থাও ভিন্ন হয়ে থাকে, অর্থাৎ কেউ আগে উপযুক্ত হয় কেউ পড়ে উপযুক্ত হয়, শক্তিমত্তা ও শরীরবৃদ্ধি বা সৃষ্টিগত উন্নতির  দৃষ্টিকোণ থেকে৷

 

একই বক্তব্য ইবনে হাজার অসকালানি রহ: তার বুখারী শরিফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারিতেও এনেছেন ৯/২৭ পৃষ্ঠা

অনুবাদ : ইবনে বাত্তাল বলেন ছোটদের বিয়ে বড়দের সাথে বৈধ সর্বসম্মতিক্রমে যদিও সেই ছোট বাচ্চাটি দোলনায় থাকার বয়সে থাকে (তবে বিবাহ বৈধ হওয়ার মানেই সহবাস বৈধ নয়) সহবাস বৈধ হওয়ার জন্য তার শারীরিক উপযুক্ততা একান্ত আবশ্যক

 

ইজমার আলোকে আমরা জানতে পারলাম সহবসারে অনুপযুক্ততার কারনে  তার সাথে সহবাস করা যায়েজ হবে নাই ।

আর ইসলামের একটি গুরুত্বপুর্ণ মুলনীতি হলো কার ক্ষতি করা যাবে না। আমরা এই বিষয় হাদিসটি দেখে নেই

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ سَعْدِ بْنِ مَالِكِ بْنِ سِنَانٍ الْخُدْرِيّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه و سلم قَالَ: ” لَا ضَرَرَ وَلَا ضِرَارَ” .رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ [راجع رقم:2341]، وَالدَّارَقُطْنِيّ [رقم:4/228]

আবূ সাঈদ সা’দ ইবনু মালিক ইবনু সিনান আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু ’আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ’আলাইওয়াসাল্লাম বলেছেন: “ক্ষতি করা উচিত নয়, আর ক্ষতির সম্মুখীন হওয়াও উচিত নয়।”

ইবনু মাজাহ (দেখুন হাদীস নং: ২৩৪১), আদ্-দারা-কুতনী (হাদীস নং: ৪/২২৮)

সমুস্ত উম্মতের ইজমার আলোকে এবং হাদিসের আলোকে প্রমানিত হয় সহবসারে অনুপযুক্ততার কারনে কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা থাকলে তার সাথে সহবাস করা জাবে না ।

 কোন মেয়ের সাথে সহবাস করতে চাইলে নিম্নের শর্ত গুলো প্রযোজ্য হবে

(ক) করিবুল বুলুগ হতে হবে

(খ) সহবাসের উপযুক্ত হতে হবে

(গ) এবং তার ক্ষতি হওয়া যাবে না ।

(ঘ) মেয়ের অসুস্থ হওয়ার সম্ভবনা না থাকতে হবে ।

কোন মেয়ে যদি বালেগ হয়ে যায় এবং অসুস্থতার কারনে সহবাসের অনুপযুক্ত হয় তবুও তার সাথে সহবাস করা যাবে না ।

গুরুত্বপূর্ণ টিকা:

করিবুল বুলুগ হলো সহবাসের উপযুক্ততার সর্বনিম্ন সীমা । করিবুল বুলুগ হলেই সহবাস করতে হবে এমন কোন বাধ্যকতা নেই  বরং আরো বড় হয়ে সহবাস করলেও সমস্যা নেই । 

 

ইসলামে শিশু বিবাহ হালাল বললে সবাই ভাবে তার সাথে সহবাস কিভাবে করবে?

আসলে শিশু বিবাহ ইসলাম হালাল করলেও তার সাথে সহবাস বৈধ করে নাই ।

শিশুর সাথে সহবাস করলে তার শাস্তি কী?

এমন শিশু যে করিবুল বুলুগ তথা সহবাস করার উপযুক্ত হয়নাই এমন শিশুর সাথে সহবাস করলে তা বৈধ হবে না । আমরা জানি শাস্তি ঐ বিষয় প্রযোজ্য হয় যা অবৈধ । সহবসারে অনুপযুক্ততার কারনে শিশুর সাথে সহবাস করার ইসলামিক শাস্তি নিম্নে দেখে নেই ১০/১৫ পৃষ্ঠা

অনুবাদ:অল্প বয়স্কা মেয়ের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করার বিধান،،

প্রশ্ন: কষ্ট হবে এমন ছোট বয়স্কা বিবাহিতা স্ত্রীর সাথে স্বামী সহবাস করতে পারবে কিনা ? যদি কোন বিবাহিতা মেয়ের এত কম বয়স হয় যে, তার সাথে সহবাস করলে তার কষ্ট হবে কিংবা জীবন চলে যাওয়ার ভয় আছে, সে ক্ষেত্রে তার সাথে সহবাস করাটা অপরাধ বলে গণ্য হবে কিনা ? এবং শরীয়ত সে( অনুপযুক্তের সাথে সহবাস যার অনুমতি ইসলাম দেয়নি) অপরাধের জন্য কি শাস্তি নির্ধারণ করেছে ,আর এক্ষেত্রে স্বামীকে মেয়ে পক্ষের অভিভাবক কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা জারি করার বিধান কি, আর নিষেধাজ্ঞার পরেও যদি জোরপূর্বক স্বামী দৈহিক সম্পর্কে স্থাপন করে, যার ফলে তার জোরপূর্বক উক্ত কর্ম মেয়ের কোন ধরনের অসুস্থতা অথবা মৃত্যুর কারণ হয় তখন বিধান কি হবে ?

জবাব: দুর্রুল মুখতার, ফতুয়ায়ে হামিদিইয়্যা, খয়রুর রমালি, যাখিরা, ফতুয়ায়ে আলমগিরি, ইত্যাদি কিতাবে যেই সমাধান দেওয়া হয়েছে তার আলোকে বলা যায় হৃষ্টপুষ্ট সহবাসের যোগ্য কারো স্ত্রীর সাথে সহবাস করলে তাহলে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু যদি রুগ্ন আর দুর্বল কম বয়স্কা মেয়ের সাথে সহবাস করে তাহলে তা যেয়েজ নেই।আর এই অবস্থায় সহবাস করা অপরাধ ।  তার জন্য সেই শাস্তি প্রযোজ্য হবে, যেমন যদি মেয়ে মারা যায় তাহলে তার দিয়ত দিতে হবে, যেটি ১০০ দিনার আর মহরও দিতে হবে, পক্ষান্তে যদি অসুস্থ হয় তাহলে তার চিকিৎসা করাতে হবে,৷আর এই হুকুম তখন প্রযোজ্য হবে যখন মেয়েটি অল্প বয়স্কা ও অতিব দুর্বল হবার কারণে ইন্টারকোর্সের অযোগ্য হবে, আর যদি সহবাসের যোগ্য হয় তাহলে স্বামীর উপর কোন ধরনের জরিমানা শাস্তি কিংবা দিয়াত আবশ্যক হবে না ,এবং এমন সময় মেয়ে কিংবা তার অভিভাবক স্বামীকে তার সাথে সময় কাটাতে বাধা দিতে পারবে না, আর যদি স্বামীর  অপ্রাপ্তবয়স্কা মেয়ের ফ্যামিলির সাথে মতানৈক্য হয়, স্বামী বলে সে সহবাসের যোগ্য আর তার ফ্যামিলি অস্বীকার করে, তাহলে এর ফায়সালা প্রদান করবে ইসলামি শরিয়তের বিচারক ,বিচারক কোন গ্রহণযোগ্য বিশেষজ্ঞ নারীকে বলবে যে ঐ মেয়েকে দেখে বলো যে সে সহবাসের উপযুক্ত কি না ? ( বিশেষজ্ঞ নারীর কথার উপর ফায়সালা করবে )

উক্ত বিষয় ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বাংলায় ২/৭১ পৃষ্ঠা দেখে নেই

 

উক্ত ফাতাওয়ার আলোকে আমরা কয়েকটি মুল বিষয় জেনে নেই

১/ সহবাসের অনুপযুক্ত মেয়ের সাথে সহবাস করা ইসলামে জায়েয নেই।

২/ সহবাসের অনুপযুক্ত মেয়ের সাথে সহবাস করা শস্তিযোগ্য  অপরাধ ।

৩/এরকম অপরাধ করলে তার শাস্তি অর্থদন্ড।

৪/ নাবালেগ মেয়ে উপযুক্ত কি না তা নির্ণয় করবে দিনদার পরহেজগার বিশেষজ্ঞ নারী । (ডাক্তার )

৫/ স্বামী চাইলেই সহবাসের অনুপযুক্ত মেয়ের সাথে সহবাস করতে পারবে না ।

৬/স্বামী সহবাসের অনুপযুক্ত মেয়ের সাথে সহবাস করতে চাইলে মেয়ের অভিভাবক মামলা দায়ের করতে পারবে ।

৭/মেয়ের সাথে সহবাস করার কারনে যদি অসুস্থ (ক্ষতি) হওয়ার সম্ভবনা থাকে তাহলে তার সাথে সহবাস করা যাবে না ।

তাই উক্ত ফাতাওয়ার আলোকে প্রমানিত হয় সহবাসের অনুপযুক্ত মেয়ের সাথে সহবাস করা শস্তিযোগ্য  অপরাধ

রাষ্ট্রের বিয়ের বয়স নির্ধারণ 

বর্তমান পৃথিবীতে বিয়ের ও সহবাসের  বয়স সকল দেশে এক নয়। কারণ সকল দেশের আবহওয়া ও খাদ্যাভ্যাষ বিভিন্ন রকমের। তাই একাক এলাকায় মেয়ে মানুষ ভিন্ন সময় উপযুক্ত হয় । এমনকি একই দেশের মেয়ে একাক জন একাক বয়ষে উপযুক্ত হয়   তাই সুনির্দিষ্ট ভাবে বিয়ের বয়স নির্ধারণ করা যৌক্তিক নয় । ইসলাম সর্বকালের জন্য এবং সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য । তাই ইসলাম বিয়ের বয়ষ নির্ধারণ করে নাই বরং উপযুক্ত হওয়াকে মূলনীতি ধরে সহবাসকে বৈধ করেছে । যা সকল যুগে সকল দেশে সকল মানুষের প্রযোজ্য । এখান থেকে প্রমাণীত হয়  ইসলাম যে মূলনীতি নির্ধারণ করেছে তা সকল মানুষের জন্য কল্যাণকর এবং এটি গ্রহন  করাই সর্বোত্তম।

আমাদের প্রশ্ন

১/ আমাদের মুসলিম সমাজে ও ইতিহাসে শিশু বিবাহের ব্যাপক প্রচলন নেই কেন?

২/ বর্তমান বিশ্বে বিয়ের  জন্য বয়স নির্ধারন করা কিভাবে বৈধ হয় যেখানে মানুষ ভেদে উপযুক্ত ভিন্ন সময় হয়?

৩/ ভালো  অভিভাবক ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে  বিবাহ দিলে সমস্যা কোথায় ?

৪/ সংকটময় পরিস্থিতে শিশু বিবাহ বৈধ হবে না কেন?

৫/ যেহতু শিশু উপযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সহবাস হয় না তাই কেন এই বিষয় অভিযোগ হবে?

৬/ নাস্তিক্য ধর্ম অন্যের ক্ষতি না করে সব কাজ বৈধ হলেও শিশু বিবাহ কেন অবৈধ হবে?

উপসংহার :

শিশু বিবাহ ইসলাম ব্যাপক উৎসাহ প্রদান করে না মুসলিম সমাজে ও ইতিহাসে এর ব্যাপকতা পাওয়া যায় না । অসহায় শিশুদে জন্য বিবাহ একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত । খারাপ পিতামাতা খারাপ উদ্দেশ্যে  বিবাহ দিলে বিবাহ বাতিল হবে । শিশু বিবাহ বৈধ হলেও তার সাথে সহবাস করা জায়েয নেই যতক্ষন না সে সহবাসের উপযুক্ত হয় ।যার হায়েজ হয় নাই কিন্তু বালেগের নিকটবর্তী এবং সহবাসের উপযুক্ত তার সাথে সহবাস জায়েয আছে ।সহবাসের অনুপযুক্ত মেয়ের সাথে সহবাস করা ইসলামে জায়েয নেই।সহবাসের অনুপযুক্ত মেয়ের সাথে সহবাস করা শস্তিযোগ্য  অপরাধ ।স্বামী চাইলেই সহবাসের অনুপযুক্ত মেয়ের সাথে সহবাস করতে পারবে না । স্বামী সহবাসের অনুপযুক্ত মেয়ের সাথে সহবাস করতে চাইলে মেয়ের অভিভাবক মামলা দায়ের করতে পারবে । বর্তমান পৃথিবীতে বিয়ের ও সহবাসের  বয়স সকল দেশে এক নয়। কারণ সকল দেশের আবহওয়া ও খাদ্যাভ্যাষ বিভিন্ন রকমের। তাই একাক এলাকায় মেয়ে মানুষ ভিন্ন সময় উপযুক্ত হয় । এমনকি একই দেশের মেয়ে একাক জন একাক বয়ষে উপযুক্ত হয়   তাই সুনির্দিষ্ট ভাবে বিয়ের বয়স নির্ধারণ করা যৌক্তিক নয় । ইসলাম সর্বকালের জন্য এবং সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য । তাই ইসলাম বিয়ের বয়ষ নির্ধারণ করে নাই বরং উপযুক্ত হওয়াকে মূলনীতি ধরে সহবাসকে বৈধ করেছে । যা সকল যুগে সকল দেশে সকল মানুষের প্রযোজ্য । এখান থেকে প্রমাণীত হয়  ইসলাম যে মূলনীতি নির্ধারণ করেছে তা সকল মানুষের জন্য কল্যাণকর এবং এটি গ্রহন  করাই সর্বোত্তম।

والله اعلم بالصواب

আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে বোঝার তাওফিক দান করুন আমিন ।

লিখেছেন: মুফতী রুহুল আমিন সিরাজী

ধর্মান্ধ মৌলবাদি লেখক ও গবেষক

Facebook
WhatsApp
X
Email