সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সমগ্র জগতের প্রতিপালক। আর সালাত ও সালাম নাযিল হোক সমস্ত নবী ও রাসূলদের সরদার আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর এবং তার পরিবার-পরিজন ও তার সমস্ত সাহাবীদের উপর।
আমি খুব ক্ষুদ্র নগণ্য বান্দা আর আমি যেই স্রষ্টা সম্পর্কে লিখতে যাচ্ছি তিনি মহান ও বিশাল স্রষ্টা। আমি নিশ্চিত আমার ভষা ব্যর্থ হবে তার পরিপুর্ণ গুনাগুণ বর্ননা করতে। আমার সিমিত ইলম অসিম সত্বার ব্যাপারে লেখা খুব কঠিন তবুও আমার হেদায়েত ও মানব জাতির চির কল্যানের আসায় মানুষের সন্দেহ দুর করার লক্ষে স্রষ্টার প্রমানের অসংখ্য প্রমান থেকে কিছু প্রমান পেশ করার ক্ষুদ্র প্রয়াস চালাব ইনশাআল্লাহ ।
এ মহাজগতে বিদ্যমান ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অনু থেকে শুরু করে সর্ববৃহৎ সৃষ্টি সবকিছুই আল্লাহ তাআলার অস্তিত্ব প্রমাণ করে। আসমান, যমীন, মহাশূন্যে বিরাজমান লক্ষকোটি গ্রহ–তারা, সাগর–মহাসাগর, পাহাড়–পর্বত সবই মহাপালনকর্তা আল্লাহ তাআলার অস্তিত্বের সাক্ষ্য বহন করে। আল্লাহ তাআলা স্বয়ং তাঁর মহাসত্তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন—
اَفِي اللهِ شَكٌّ فَاطِرِ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ.
আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর ব্যাপারে কি তোমরা সন্দেহের মধ্যে রয়েছ? —সূরা ইবরাহীম (১৪) : ১০
মহাজগতে প্রতিটি সৃষ্টির মধ্যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অস্তিত্বের সুস্পষ্ট প্রমাণ সমুজ্জ্বলরূপে বিদ্যমান। আল্লাহ তাআলার অস্তিত্বের অসংখ্য নিদর্শন মানব সৃষ্টি এবং সৃষ্টিকুলের অপরাপর সৃষ্টিসমূহের মধ্যে বিরাজমান।
প্রবাদ রয়েছে— স্থাপত্য দেখে স্থপতি চেনা যায়, লেখা দেখে লেখক চেনা যায়, কবিতা দেখে কবির পরিচয় পাওয়া যায়। তাহলে কি এ বিশাল সৃষ্টি ও তাতে বিদ্যমান নিদর্শনাবলি দেখে এ সবের অস্তিত্ব দানকারী আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায় না?
স্রষ্টায় যারা অবিশ্বাস করে তারা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ধারনা করে যে তারাই জ্ঞানী কারন বিশ্বাস করতে জ্ঞানের প্রয়োজন হয়না বরং অবিশ্বাস করতে জ্ঞানের প্রয়োজন হয় ।সকল মানুষের বিশ্বাসের বাহিরে গিয়ে ভিন্ন কিছু চিন্তা করাটাই মুলত এই ধারনার কারন।এবার একটু চিন্তা করুন ইউরপের কোন এক নাস্তিক ফ্যামেলিতে বেরে ওঠা মানুষ যদি স্রষ্টায় বিশ্বাস করে এবং ধারনা করে স্রষ্টায় বিশ্বাস করাটাই একটি জ্ঞানের কাজ অবিশ্বাস করা সহজ তাহলে আমাদের সমাজের নাস্তিকরা কি মেনে নিবে ?
স্রষ্টার পরিচয়
অনেক নাস্তিক আছে তারা বলে আমি স্রষ্টাকে অনেক খুজেছি কোথাও খুজে পাইনি আসলে খুজে পাবে কিভাবে তারা তো স্রষ্টার পরিচয় না জেনেই খুজেছে। আমি যদি কোন নাস্তিককে বলি ভাই আমাকে গোলাপ ফুল দেন আর নাস্তিক দোকানদার গোলাপ ফুল না চিনেই খোজাখুজি শুরু করে তাহলে কি গোলাপ ফুল সে খুজে পাবে? কখনো পাবে না। তেমনি স্রষ্টার পরিচয় না জেনেই যদি নাস্তিকরা খোজাখুজি শুরু করে তাহলে কিভাবে খুজে পাবে? তাই স্রষ্টার পক্ষের যুক্তিগুলো বোঝার আগে স্রষ্টার পরিচয় জানা জরুরি।
তাই স্রষ্টার যে পরিচয় ইসলামিক স্কলারগন পেশ করেছেন তা থেকে কিছু পরিচয় পেশ করছি।
আল আকিদাতুল হাসানা কিতাবে শাহ্ ওলিউল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবি (রহ:) আল্লাহর যে পরিচয় পেশ করেছেন তা বর্ণনা করছি:
যিনি আল্লাহ বা স্রষ্টা হবেন তিনি চিরন্তন ও অনাদি,তার অস্তিত্ব অবশ্যম্ভাবি ,তিনি মহান,তিনি সকল সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তা,তিনি সর্বজ্ঞানী ,তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী,তিনি একচ্ছত্র ইচ্ছা শক্তির অধিকারী। তিনি চিরন্জীব , সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা,তিনি অনন্য ও অদ্বিতীয় ,তার কোন অংশীদার নেই,তিনিই একমাত্র ইলাহ,সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ তাঁরই কর্তৃত্বে,তার কোন সহযোগী নেই,তিনি অবতারিত হন না,তিনি একীভূত হয়ে যান না,তিনি অবিনশ্বর,তিনি উপাদান গঠিত ,দেহবিশিষ্ট কিংবা দেহের সংগে সম্পৃক্ত নন, তিনি স্থান কালের বন্ধন থেকে মুক্ত,তাঁর সত্তা ও গুণসমুহ অপরিবর্তনীয় ,তিনি অজ্ঞতা ও মিথ্যর বিশেষণ থেকে পবিত্র,তিনি চির নির্মুখাপেক্ষী, তিনি প্রজ্ঞাময়,তার গুণসমুহ তার সত্তার মতই একক। এভাবে তার অসংখ পরিচয় রয়েছে যা অসিম পর্যায় চলে যাবে।
আল্লাহকে দুনিয়ার চোখে দেখা যায় না কেন?
দীর্ঘদিন যাবত স্রষ্টায় অবিশ্বাসীদের বই পত্র পড়ে এবং তাদের সাথে কথা বলে একটি বিষয় বুঝতে পারলাম যে স্রষ্টা অবিশ্বাস করার পিছনে গুরুত্বপুর্ণ কারন হলো স্রষ্টাকে নিজ চোখে না দেখতে পাওয়া । পুরো নাস্তিক্যবাদ মুলত টিকে আছে এই বক্তব্যের উপর যে স্রষ্টা থাকলে তাকে আমি দেখিনা কেন? এই বিষয়টি না থাকলে নাস্তিক্যবাদ চিরতরে জাদুঘরে চলে যাইতো । এই বিষয়টি অনুসন্ধান করতে হলে আমাদের আগে জানতে হবে পঞ্চন্দ্রিয়। মানুষ বিভিন্ন জিনিসকে বিভিন্ন ইন্দ্রিয় দারা প্রমান করে থাকে এক ইন্দ্রিয় দারা সকল কিছু প্রমান করা সম্ভব নয় । চোখের কাজ হলো দেখতে পাওয়া এখন জদি কেও দাবি করে আমি চোখ দিয়ে ফুলের ঘ্রান নিতে পারি না কেন?আমি তখন মেনে নিব যখন আমি চোখ দিয়ে ফুলের ঘ্রান নিতে পারবো ।আসলে কি কোন মানুষের জন্য সম্ভব চোখ দিয়ে ঘ্রান নেওয়া? তাই চোখ দিয়ে ঘ্রান নিতে না পারায় কোন মানুষ জদি ফুলের ঘ্রান অবিশ্বাস করে তাতে কি ফুলের ঘ্রান নাই হয়ে যাবে? তাহলে এখান থেকে বুঝলাাম যে জিনিস যেই ধরনের তা প্রমান করার পদ্ধতিও সেই ধরনের । জন্মান্ধ মানুষ যদি দাবি করে যেহতু আমি আলো দেখিনা সুতরাং সূর্য নেই। তার এই দাবি কখনোই সঠিক প্রিমাণিত হবে না ।কারণ তার না দেখতে পাওয়া সূর্য নাথাকার প্রমান হতে পারে না । জন্মান্ধকে কিভাবে বুঝাবেন সকাল দুপুর সন্ধ্যা রাত কখন হয়? তাকে কিন্তু নিদর্শন এর মাধ্যমেই বুঝাতে হবে, যখন হাল্কা বাতাস থাকবে এবং তাপ মাত্রা অল্প থাকবে তখন বুঝাতে হবে সকাল। প্রচন্ড রৌদ্রের সময় বেশি তাপের মাধ্যমে বুঝাতে হবে এখন দুপুর। এবং বিকেলে অল্প তাপমাত্রায় বুঝাতে হবে এখন রাত। সুতরাং আল্লাহকেও তার নিদর্শন এর মাধ্যমেই বুঝাতে হবে। তাই আল্লাহকে না দেখতে পাওয়া আল্লাহ না থাকার প্রমান হতে পারে না । আল্লাহকে দেখা যাবে কি না এই বিষয় আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন :
সূরা আল আনআম ( আয়াত নং – ১০৩ )
لَا تُدۡرِکُہُ الۡاَبۡصَارُ ۫ وَہُوَ یُدۡرِکُ الۡاَبۡصَارَ ۚ وَہُوَ اللَّطِیۡفُ الۡخَبِیۡرُ
দৃষ্টিসমূহ তাঁকে ধরতে পারে না, কিন্তু দৃষ্টিসমূহ তার আয়ত্তাধীন। তাঁর সত্তা অতি সূক্ষ্ম এবং তিনি সর্ব বিষয়ে অবগত।
আল্লাহর অস্তিত্ব দেখা যাবেনা কারণ এটা চোখ ইন্দ্রিয় দেখার মতো যোগ্য নয়। এবং আল্লাহকে না দেখতে পাওয়ার কারনো আল্লাহ উল্লেখ করেছেন যে তিনি অতিসূক্ষ্ম আর এই বিষয় নিয়ে মুফাসসির গন কি বলেছেন তা দেখে নেই।
তাঁর সত্তা এতই সূক্ষ্ম যে, কোনও দৃষ্টি তাকে ধরতে পারে না এবং তিনি এত বেশি ওয়াকিফহাল যে, সকল দৃষ্টিই তাঁর আয়ত্তাধীন এবং সকলের যাবতীয় অবস্থা সম্পর্কে তিনি সম্যক জ্ঞাত।
ধরুন আমি মানুষের মতো রোবট বানাতে পারি আমার এই রোবট বানানোর জ্ঞান কি দেখা যায়? যদি আমি রোবট বানিয়ে দেখাই তবুও আমার জ্ঞান কিন্তু দেখা যায় না বরং আমার জ্ঞান যে আছে এটা আমার কজের মাধ্যমে প্রমানিত হয় । সুতরাং স্রষ্টাকে দেখা যায় না তার মানে স্রষ্টা নেই তা কখন প্রমানিত হয় না বরং স্রষ্টার সৃষ্টির মাধ্যমে প্রমানিত হয় স্রষ্টা আছেন।
জ্ঞান বিবেক বুদ্ধি দিয়ে স্রষ্টার অনুসন্ধান কি ইসলামে নিষেধ করেছে?
নাস্তিকরা মনে করে থাকে ইসলাম একেবারে চিন্তা গবেষণা ছারা গ্রহণ করতে বলে। আল্লামা ইদ্রিস কান্ধলভি (রহ:) এর মতে আল্লাহ কুরআনে ৬৫০ আয়তে আসমান জমিন নিয়ে চিন্তা গবেষনার কথা বলেছেন যাতে করে এই বিশাল জগত কিভাবে হলো ইহা নিয়ে আমরা চিন্তা গবেষনা করতে পারি এবং স্রষ্টাকে চিনতে পরি। এবার কুরআনের আয়াত মনযোগ দিয়ে দেখে নেই।
১ নং দলিল : সুরা ইউনুস আয়ত নং ১০১
قُلِ انۡظُرُوۡا مَاذَا فِی السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ ؕ وَمَا تُغۡنِی الۡاٰیٰتُ وَالنُّذُرُ عَنۡ قَوۡمٍ لَّا یُؤۡمِنُوۡنَ
(হে নবী!) তাদেরকে বল, লক্ষ করে দেখ আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীতে কি কি জিনিস আছে? কিন্তু যে সব লোক ঈমান আনার নয়, (আসমান ও যমীনে বিরাজমান) নিদর্শনাবলী ও সতর্ককারী (নবী)গণ তাদের কোনও কাজে আসে না।
২ নং দলিল : সুরা আরাফ আয়ত নং ১৮৫
وَلَمۡ یَنۡظُرُوۡا فِیۡ مَلَکُوۡتِ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ وَمَا خَلَقَ اللّٰہُ مِنۡ شَیۡءٍ ۙ وَّاَنۡ عَسٰۤی اَنۡ یَّکُوۡنَ قَدِ اقۡتَرَبَ اَجَلُہُمۡ ۚ فَبِاَیِّ حَدِیۡثٍۭ بَعۡدَہٗ یُؤۡمِنُوۡنَ
তারা কি লক্ষ্য করেনি আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্বে এবং আল্লাহ যে সকল জিনিস সৃষ্টি করেছেন তার প্রতি এবং এর প্রতিও যে, সম্ভবত তাদের নির্ধারিত সময় কাছেই এসে পড়েছে? সুতরাং এর পর আর কোন কথায় তারা ঈমান আনবে?
৩ নং দলিল : সুরা আল ইমরান আয়ত নং ১৯০
اِنَّ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ وَاخۡتِلَافِ الَّیۡلِ وَالنَّہَارِ لَاٰیٰتٍ لِّاُولِی الۡاَلۡبَابِ ۚۙ
নিশ্চয়ই আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃজনে ও রাত-দিনের পালাক্রমে আগমনে বহু নিদর্শন আছে সকল বুদ্ধিমানদের জন্য
৪ নং দলিল : সুরা আল ইমরান আয়ত নং ১৯১
الَّذِیۡنَ یَذۡکُرُوۡنَ اللّٰہَ قِیٰمًا وَّقُعُوۡدًا وَّعَلٰی جُنُوۡبِہِمۡ وَیَتَفَکَّرُوۡنَ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ ۚ رَبَّنَا مَا خَلَقۡتَ ہٰذَا بَاطِلًا ۚ سُبۡحٰنَکَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে (সর্বাবস্থায়) আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে (এবং তা লক্ষ্য করে বলে ওঠে) হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি এসব উদ্দেশ্যহীনভাবে সৃষ্টি করেননি। আপনি (এমন ফজুল কাজ থেকে) পবিত্র। সুতরাং আপনি আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন।
কুরআনে এরকম ৬৫০ আয়াতের উদ্দেশ্য হলো পৃথিবী নিয়ে চিন্তা গবেষণা করা । এবং এগুলো কে সিৃষ্টি করলো তা সন্ধান করা ।এই আয়াত গুলো দারা কখনোই এটা উদ্দশ্য নয় যে শুধুই পৃথিবী আসমান জমিন সম্পর্কে জ্ঞান আর্জন করা বরং পৃথিবী আসমান জমিন সম্পর্কে জ্ঞান আর্জন করে তা কে সৃষ্টি করলো? তা অনুধাবন করা ।আর এই মহাবিশ্ব জিনি সৃষ্টি করলেন তিনি কত বড়? তার সান কত বড় ? এটা বুঝতে পারা ।যেমন কোন বাদশার দরবারে যদি তার মেহমান প্রবেশ করে তাহলে বাদশার রাজ প্রসাদের সৌন্দর্য ও অট্রালিকা দেখে বাদশার সান মান বুঝতে পারে । ঠিক বাদশার দরবারে যদি কোন চোর প্রবেশ করে তখন তার নজর থাকে কোন জিনিসটা কত মুল্যবান এবং তা বিক্রি করলে কতটাকা পাওয়া যাবে সুতরাং দৃষ্টি ভংগীর উপর নিরভর করে বিষয়টি আসলে কিভাবে ভাবা হচ্ছে। তেমনি বিজ্ঞানের কাজ কখনো এটা নয় যে স্রষ্টা প্রমান করা বা না করা বরং বিজ্ঞানের কাজ বস্তু জগতকে ব্যাখ্যা করা এবং বস্তু জগত থেকে কি কি উপকার পাওয়া যায় সেটা বের করা । সুতরাং বিজ্ঞান যদি কখনো দাবিও করে বসে স্রষ্টা নেই তবুও প্রমানিত হয় না যে স্রষ্টা নেই যেমন মুর্খ কোন লোক দাবি করলো আমি সব জানি তাহলে সে যে মুর্খ এইটা না জনাও একটা মুর্খতা । সতরাং বিজ্ঞান যদি দাবিও করে স্রষ্টা নেই তহলে এটা হবে সেই মুর্খদের মত। কারণ বিজ্ঞান স্রষ্টা প্রমানিত বা অপ্রমানিত কোনটিই প্রমান করতে পারবে না কারন বিজ্ঞান বস্তুজগতের বাহিরে কোন জিনিস নিয়ে গবেষনা করে না । আর স্রষ্টা বস্তু জগতের বাহিরের জিনিস যা বস্তুজগতের থিউরি দিয়ে প্রমানিত বা অপ্রনিত হয় না ।
স্রাষ্টা থাকা বা না থাকাতে আমাদের কোন সমস্যা নেই?
নাস্তিকদের সাথে স্রষ্টা বিশ্বাস এর যৌক্তিক আলাপে ঢুকলেই শুরুতেই কিছু নাস্তিক বলে বসেন স্রষ্টা থাকা বা না থাকাতে আমাদের কিছু আসে যায় না কারণ স্রষ্টার কোন প্রভাব আমরা দেখি না। আমি সাধারণত এই যুক্তির সাথে কোনভাবেই একমত হতে পারি না। কারণ স্রষ্টা না থাকলে কোন সমস্যা নেই কথাটা মানলেও পরের কথা টা কিন্তু মানা যায় না। কারণ স্রষ্টা থাকলে আমাদের কোন সমস্যা নেই এটা কেমন কথা? স্রষ্টা থাকলে অবশ্যই আমাদের সমস্যা আছে। স্রষ্টা থাকলে স্রষ্টার কথা মতো জীবন জাপান করতে না পারলে অবশ্যই সমস্যা আছে। স্রষ্টা কি কোন উদ্দেশ্য হিন ভাবে আমাদের সৃষ্টি করতে পারেন?তাহলে স্রষ্টা না থাকলে সমস্যা নেই কিন্তু স্রষ্টা থাকলে কিন্তু আমাদের অবশ্যই সমস্যা আছে। এখানে যারা বলেন স্রষ্টা থাকলে তার প্রভাব দেখি না কেন? আমরা তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই এই পুরো মহাবিশ্ব কি স্রষ্টার প্রভাব নয়?ফুল ফল সবুজ শ্যামল গাছ পালা ভালো বাসা কান্নাকাটি বেদনা সুন্দর অসুন্দর সুস্থতা অসুস্থতা এগুলো কি স্রষ্টার প্রভাব নয়?আমার বুঝে আসে না এতো বিচিত্র রকমের প্রভাব কে অসিকার করা কিভাবে সম্ভব?এইযে আমাদের কন্ঠ কারো সুন্দর বা অসুন্দর এইগুলো কি স্রষ্টার প্রভাব নয়? আমি মনে করি স্রষ্টার এতো গুলো প্রভাব অশিকার করা সূর্যকে অশিকার করার সামিল। এবার আমরা স্রষ্টা সম্পর্কে কিছু যুক্তি উপস্থাপন করবো ইনশাআল্লাহ।
পৃথিবী থেকে স্রষ্টার প্রমাণে আমাদের কিছু যুক্তি
১/আপনি যদি বড় বড় দালান কোঠা এবং ফর্নিচার ও মিশরের পিরামিড দেখে ধারনা করেন এগুলো এমনি এমনি হয়েছে তাহলে কি আপনার ধারনা সঠিক হবে? কখন না । আর আপনি যদি নাও জানেন মিশরে পিরামিড কে বানিয়েছে তবুও কিন্তু আপনি নিশ্চিত যে এটা কেও না কেও বানিয়েছে এটা এমনি এমনি হয় নাই । তেমনি এই মহাবিশ্ব কেন প্রমান করবে না এটা একজন সত্বা বানিয়েছেন । সুতরাং সহজ ভাবে বোঝা জায় সকল কিছু স্রষ্টা বানিয়েছেন ।
২/ধরুন কাল্পনিক ভাবে একজন মুসলিম ও একজন নাস্তিক চাদের দেশে চলে গেল সেখানে হাটতে শুরু করলো কিছুদুর হাটার পর দেখতে পেল একটি ক্যামেরা এবার ক্যামেরার স্রষ্টা আছে কি না তা নিয়ে উভয়জন চিন্তা করলো তারা কেও জানেনা ক্যামেরা কে বানিয়েছে? তারা খুব সহজে নাস্তিক আস্তিক মেনে নিল যে এই ক্যামেরার একজন বানানে ওয়ালা আছে। এরপর আবার হাটতে শুরু করলো কিছুদুর হাটার পর সেখানে একটি খরগস দেখতে পেল এবার মুসলিম বন্ধু বললো এই খরগসের কি কোন স্রষ্টা নেই ? আসলে যুক্তি ছারা নাস্তিকের খরগষের স্রষ্টা অসিকার করা যেমন ভুল সিদ্ধান্ত তেমনি এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা অবিশ্বাস করাও বোকমি।
৩/আরবি গ্রামারের ভষায় ক্রিয়া (ফেয়েল ) থাকলে করতা(ফায়েল) থাকে সুতরাং মহাবিশ্ব্য একটি ক্রিয়ার ফল সুতরাং তার স্রষ্টা প্রমানিত।
৪/গুন (সিফাত ) থাকলে তার গুন ওয়লাও (মাওসুফ) থাকবে । এই মহাবিশ্ব্য সব কিছু গুনাগুনে ভরপুর সুতরাং তার এই সিফাত প্রমান করে স্রষ্টা আছেন ।
৫/ আপনি দোকানে গেলেন সেখানে সুন্দর শিলাই করা একটি কাপর দেখতে পেলেন এবং সুন্দর সুন্দর জুতা দেখতে পেলেন আপনি কিন্তু জানেন না যে এগুলো কে বানিয়েছে তবুও কিন্তু মেনে নিবেন এগুলোর বনানে ওয়ালা আছে।তাহলে এই মহাবিশ্বর একজন বানানে ওয়ালা আছে তা কেন মানবেন না ?
6/ আপনি নিজের দিকে তাকান আপনি কিভাবে অস্তিত্বে আসলেন?
উপর উক্ত ছবির এক অংশ মানষের আর এক অংশ রোবটের যদি প্রশ্ন করা হয় রোবট অংশ একাকি হয়েছে নাকি তার কোন স্রষ্টা আছে ?তাহলে নাস্তিক আস্তিক সকলে বলবে তার স্রষ্টা আছে । আর মানুষ অংশের ব্যাপারে কেন বলা হবে তার কোন স্রষ্টা নেই?
অনেকেই আবার দাবি করে থাকেন আমার স্রষ্টা আমার মা কারন মায়ের পেট থেকেই আমার জন্ম হয়েছে সুতরাং স্রষ্টাকে যদি মানতেই হয় তাহলে মা কে স্রষ্টা হিসেবে মানবো । আমরা এর উত্তরে বলবো অনেক সময় মায়ের পেট থেকে মরা বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে তাহলে মা যদি স্রষ্টা হয় সে কি পারবে তার মৃত সন্তানকে জিবিত করতে? না কখনো পারবে না । তার মানে সে কখনো স্রষ্টা হতে পারে না ।
৭/ আমরা একদিন ছিলাম না আবার আমাদের অস্তিত্ব আছে আবার একদিন আমরা থাকবোনা এইযে ছিলামনা এখন অছি কে আমাদের অস্তিত্বে আনলেন অবশ্যই স্রষ্টা । স্রষ্টা ছারা অন্য চিন্তা সঠিক হওয়ার কোন সম্ভবনা নেই ।
৮/ এইযে নিম্নের কিতাবটি দেখতে পাচ্ছেন এই কিতাবটির লেখক কে তা সঠিক ভাবে নিশ্চিত জানা যায় না ।
এই পুস্তক যেখানে অনেক গবেষণা ভিত্তিক লেখা আছে কেও জদি দাবি করে এই বই কেও লেখেনি এগুলো কাগজ ও কালি নামক বস্তু হটাত ক্রিয়ার ফলে এই বইটি লেখা হয়ে গেছে। তাতে কি প্রমানিত হবে এই বই কেও লেখেনি ? তা কখনো প্রমানিত হবে না যদিও আমরা জানিনা যে এই বইটি কে লিখেছে ? সুতরাং এই সামান্য বই যদি লেখক ছরা সম্ভব না হয় । তাহলে স্রষ্টা ছারা সকল কিছু কিভাবে হতে পারে?
৯/ আপনি আপনার দাদার দাদা ও তার দাদার দাদাকে কিভাবে প্রমাণ করবেন? যদি বলেন ডিএনএ টেস্ট করবেন কিন্তু তার তো কোন হাড্ডিও খুজে পাবেন না তাহলে ডিএনএ কিভাবে টেস্ট করবেন? দূর বর্তি এই দাদাকে প্রমাণ করতে হলে আগে আমাদের সত্য সাক্ষ্য লাগবে। যেমন আপনার দাদা যদি তার ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয় যে তিনি তার দাদা ছিলেন তবেই সেই দাদা সাব্যস্ত হবে নতুবা হবে না। তার মানে দাদা কে প্রমাণ করতে হলে আমাদের সত্য সাক্ষ্য এর কাছেই যেতে হবে সক্ষ্য ছাড়া সম্ভব নয়। তাই যেহেতু আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে সেই দাদা আসলেই ছিলেন তাই তাকে প্রমাণ করতে যেমন সাক্ষ্য প্রয়োজন তেমনি এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা প্রমাণিত হওয়ার জন্য সত্য সাক্ষ্য প্রয়োজন। মক্কার কাফেররা মুহাম্মদ সা:কে সত্য বাদি বলে উপাধি দিয়েছিল। এবং মুহাম্মাদ সা:থেকে কখনো মিথ্যা প্রমাণিত হয় নাই তাই তার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য। আর মুহাম্মাদ সা: বলেছেন স্রষ্টা একজন আর তিনি তার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনিই আল্লাহ তায়ালা তাই তার এই সাক্ষ্য অবশ্যই প্রমাণ করে যে স্রষ্টা আছেন।
১০/ একটি ফুল গাছ মাটিতে লাগান এরকমো ফুল আছে যেই ফুলে ৮ রকমের রঙ আছে। আর যেই মাটিতে এই গাছটি হয়েছে সেই মাটিতে এই রংগের কিছুই পাবেন না। তাহলে কে এই পদ্ধতি তৈরী করলেন? মাটিতে এই রংগের এতো রহস্য কে দিলেন? আমি এবং আপনি কি পারবো এই মাটি থেকে বিভিন্ন রংগে তৈরিকৃত একটি ফুল বানাতে? যেখানে রংগের কোন পদার্থ থাকবে না। এই হরেকরকম রঙ যিনি মাটি থেকে সৃষ্টি করলেন তিনি কি স্রষ্টা না? অবশ্যই তিনি বুদ্ধিমান পাওয়ারফুল স্রষ্টা। জিনি ফুলকে বিভিন্ন রংগে সুসজ্জিত করেছেন।
১১/ বট গাছের একটি বিচি মাটিতে রেখে আসলে কতো বিশাল বট গাছ তৈরী হয়? এই ছোট্ট একটা বিচিতে এতো বিশাল গাছ এটা কি স্রষ্টার ছাড়া সম্ভব? অবশ্যই এটা জিনি করেন বা করছেন তিনিই স্রষ্টা
১২/আল্লামা আহমাদ ইবনু মিসকাওয়াহ আল ফাওজুল আসগার গ্রন্থে বলেন আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত এমন কোন বস্তুই তোমার দৃষ্টিগোচর হবে না যা গতিহীন এই গতি বা ক্রিয়া ৬ ধরনের:
(১)হারকাতে কাওন তথা অস্তিত্বলাভের ক্রিয়া ।
(২) হারকাতে ফ্যাসাদ তথা বিনাশ ক্রিয়া ।
(৩) হারকাতে নুমু তথা প্রবৃদ্ধিমূলক ক্রিয়া।
(৪) হারকাতে নুকসান তথা ত্রুটিজনিত ক্রিয়া।
(৫)হারকাতে ইসতিহার তথা অনতিক্রমনীয় ক্রিয়া ।
(৬)হারকাতে নাকল তথা স্থানান্তর ক্রিয়া ।
পর্যবেক্ষণ দারা প্রমানিত যে কোনো গতিই এক অবস্থা ও এক ধারায় থাকে না এতে বোঝা যায় কোন বস্তুর গতিই তার নিজস্ব নয় বরং তার বাইরের কোন সত্তা কর্তৃক গতি দান করায় তা গতিশীল । সারা বিশ্বের সব বস্তুর গতি যার নিয়ন্ত্রণে, তিনিই হচ্ছেন মূল গতিদানকারী স্রষ্টা ।
১৩/ যারা আল্লাহর অস্তিত্ব দেখতে চাই, তাদের মৌমাছির দিকে লক্ষ্য করা উচিত। মৌমাছিদের মৌচাকে বসবাস করার জন্য মৌচাকে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি হওয়া প্রয়োজন। যদি তাপমাত্রা কোন কারণে ৩০ ডিগ্রিতে নেমে আসে, তখন সমস্ত মৌমাছি একত্রে হয়ে, তাদের ডানা ঝাপটিয়ে মৌচাকের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে।যদি তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি হয়, তারা উল্টো ভাবে ডানা ঝাপটিয়ে মৌচাকের তাপমাত্রা ঠান্ডা করে। তাই তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রিতে নেমে আসে। এই পুরো কাজটা করার জন্য প্রচুর জ্ঞান প্রয়োজন কিন্তু মৌমাছিদের এই জ্ঞান থাকা সম্ভবন নয়।এই বিস্ময়কর কাজ তারা নিজেরা পারার কথা না। তাহলে অবশ্যই মৌমাছিরা এমন কারো নির্দেশনা অনুযায়ী কাজটি করে, যার এই জ্ঞান রয়েছে। এমন একজন যিনি সারা বিশ্বে সমস্ত মৌমাছিদের নির্দেশ ও চালোনা করে এই জটিল কাজটি সম্পন্ন করাতে সক্ষম এবং তিনিই একমাত্র আল্লাহ-ই হতে পারেন।
১৪/
জ্ঞান বুদ্ধিহীন অস্তিত্ব কি এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করতে পারে?
আমরা কুরআনের আয়াত থেকে ৪ টি অবস্থা উল্লেখ করবো তার আগে কুরআনের আয়াত দেখে নেই: সুরা তুর আয়াত নং ৩৫
اَمۡ خُلِقُوۡا مِنۡ غَیۡرِ شَیۡءٍ اَمۡ ہُمُ الۡخٰلِقُوۡنَ ؕ
اَمۡ خَلَقُوا السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ ۚ بَلۡ لَّا یُوۡقِنُوۡنَ ؕ
مۡ عِنۡدَہُمۡ خَزَآئِنُ رَبِّکَ اَمۡ ہُمُ الۡمُصَۜیۡطِرُوۡنَ ؕ
যেহতু এই মহাবিশ্ব প্রমাণিত সুতরাং তার অস্তিত্ব উপস্থিত হওয়ার জন্য ৪ টি সম্ভবনা থাকতে পারে।
(১)এই মহাবিশ্ব ০ থেকে এসেছে
(২)এই মহাবিশ্ব নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছেন
(৩)এই মহাবিশ্ব creted (যাকে কেও সৃষ্টি করেছেন) বস্তু থেকে এসেছেন।
(৪)এই মহাবিশ্ব এমন সত্বা থেকে এসেছেন যার কোন স্রষ্ট নেই (uncreted)
কোন বস্তু অস্তিত্বের পিছনে এই চারটি কারণ ছাড়া আমরা আর কোন সম্ভবনা দেখি না যদি অন্য কোন সম্ভবনা থেকেও থাকে তা আমরা জানি না। আর সেই কাল্পনিক সম্ভবনা যদি নাস্তিকদের পক্ষেও যায় তবুও ধরে নেওয়া হবে নাস্তিকতা একটি কাল্পনিক সম্ভবনার উপরে দারিয়ে। আর আমাদের সমাজের নাস্তিকেরা দাবি করে থাকেন তারা কাল্পনিক জিনিসের উপর ভিত্তি করে তাদের নাস্তিকতাবাদ দার করাবেন না। সুতরাং আমরা অবশ্যই বাস্তবিক এই চারটি সম্ভবনার উপর ভিত্তি করেই যুক্তিতর্ক করাকে সঠিক সিদ্ধান্ত মনে করি। আসুন আমরা চারটি সম্ভবনাকে সঠিক ভাবে নিজেদের জ্ঞান বিবেক বুদ্ধি দিয়ে সহজে বোঝার চেষ্টা করি।
উত্তর: ১/এই মহাবিশ্ব ০ থেকে এসেছে। ০ থেকে কি কোনভাবে কোন কিছুর অস্তিত্ব আসা সম্ভব? আমার সমাজে এর কি কোন প্রমাণ আছে? নেই কোন প্রমাণ নেই। বরং এই মহাবিশ্ব পুরোটাই একটা প্রমাণ যে ০ থেকে কোন কিছু আসে না। যেমন গাছ থেকে ফল হয়। মানুষ থেকে মানুষ হয়। সুতরাং ০ থেকে কোন কিছুর অস্তিত্ব আসা এটা একটা অসম্ভব ও কাল্পনিক।
আমরা যদি একটি গণিত দেখি ০+০=০ হবে
কিন্তু কেও যদি দাবি করে ০+০=১ এই গণিত কি কেও মানবে?
তাহলে এতো সহজ গণিত ভুল করে যদি কেও নাস্তিক হয় তাহলে কি আমাদের কিছু করার আছে?
উত্তর : ২/ এই মহাবিশ্ব নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছেন। আচ্ছা বলুন তো আপনার বাবা কি নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করতে পারবেন?আপনার বাবা যদি নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেন। তাহলে তার অস্তিত্ব সৃষ্টি করার আগেই তাকে প্রমাণিত হতে হচ্ছে যা অসম্ভব। যেমন আপনি কি আপনার হাত পা মুখ এগুলো সৃষ্টি করতে পারবেন? না কখনো সৃষ্টি করতে পারবেন না। সুতরাং এই মহাবিশ্ব নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছেন এটা একটা ভুল দাবি।
উত্তর:৩/এই মহাবিশ্ব এমন এক স্রষ্টা সৃষ্টি করেছেন যাকে অন্য কেও সৃষ্টি করেছেন। এটা কোন ভাবেই সম্ভব না। কারণ এই মহাবিশ্বের কোন জিনিস আরেকটা জিনিস কে সৃষ্টি করতে পারে না যেহেতু তার একটা শুরু আছে। আর যেই জিনিসের শুরু আছে তা অন্য কোন জিনিস ০ থেকে সৃষ্টি করতে পারেন না। যেমন আমি আপনি ০ থেকে কোন জিনিস সৃষ্টি করতে পারি না। সুতরাং কোন কিছু ০ থেকে এমন সত্বাই সৃষ্টি করতে পারেন যার কোন স্রষ্টা বা শুরু নেই
উত্তর: ৪/এই মহাবিশ্ব এমন সত্বা থেকে এসেছে তার কোন স্রষ্টা থাকা যাবে। বা শুরু থাকা যাবে না শুধু মাত্র যুক্তির বিচারে এই প্রকারটি শক্তিশালী এবং প্রমাণিত সত্য।
এবার এই মহাবিশ্ব জিনি সৃষ্টি করলেন তার মধ্যে ৪ গুন থাকা জরুরি। এই চার গুন ছাড়া কোন কিছু সৃষ্টি করা সম্ভব নয়।
(১)তার সৃষ্টি করার ক্ষমতা থাকতে হবে।
(২)তার সৃষ্টি করার ইচ্ছা থাকতে হবে।
(৩) তার সৃষ্টি করার জন্য বুদ্ধিমান সত্বা হতে হবে।
(৪)এমন স্রষ্টা হতে হবে যাকে কেও সৃষ্টি করতে পারে না। এবং ০ থেকে সৃষ্টি করার ক্ষমতা থাকতে হবে।
এই চার গুন ছাড়া কোন কিছু কারো পক্ষে সৃষ্টি করা সম্ভব না।
কোন জ্ঞান বুদ্ধিহীন ও ক্ষমতাহীন বস্তু কি এই সুন্দর পৃথিবী সৃষ্টি করতে পারে?যেমন একটা কলম কি বিড়ানি তৈরী করতে পারবে?পারবে না তাই বলা যায় এই মহাবিশ্ব জিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি অবশ্যই বুদ্ধিমান সত্বা।
ঘোড়ারডিম কি স্রষ্টা হতে পারে?
স্রষ্টার দাবি প্রমাণিত হওয়ার সাথে সাথে নাস্তিকেরা দাবি করে থাকে যে এই মহাবিশ্ব জিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি একটা ঘোড়া বা অনেক নাস্তিক দাবি করে থাকেন আমিই হলাম স্রষ্টা।
আমরা তাদের বলবো যদি কোন নাস্তিক এই দাবি করেন যে আমিই হলাম স্রষ্টা তাহলে প্রথমেই তাকে বলবো আপনি তাহলে ০ থেকে সৃষ্টি করে দেখান যদি আপনি সৃষ্টি করে দেখাতে পারেন তাহলে আমি মেনে নিব আপনি স্রষ্টা। আজ পর্যন্ত কোন নাস্তিক আমার কাছে এই দাবি করার পর তাদের কথা এক সেকেন্ড প্রমাণ করতে পারেন নাই।
আবার অনেকেই দাবি করেন ঘোড়ার ডিম হলেন স্রষ্টা।
এটা প্রমাণিত সত্য যে ঘোড়ার ডিম হয় না। যদি কাল্পনিক অর্থে এটাকে একটা নাম বাচক শব্দ ধরেও নেই এবং সেটাকে নাস্তিকরা স্রষ্টা হিসেবে মেনেও নেয়। আমরা উপরে স্রষ্টা হওয়ার জন্য যে গুনাগুন উল্লেখ করেছি সেই গুন গুলি যদি নাস্তিকরা ঘোড়ার ডিম এর মধ্যে আছে এই কথা মেনেও নেয় তবুও কিন্তু প্রমাণিত হয় স্রষ্টা একজন অবশ্যই আছেন। আপনি তাকে যেই নাম দিয়েই ডাকেন না কেন নাম দিয়ে কিছু যায় আসে না। আপনি কিন্তু নাস্তিক থাকতে পারলেন না।
স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করলো?
স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করলো? এই প্রশ্নটা হলো এরকম আগুনকে কে পোড়াইলো? আগুন সব কিছুকে পোড়ায় আগুনকে কেও পোড়াতে পারে না তেমনি স্রষ্টা এমন সত্বা জিনি সবাইকে সৃষ্টি করেছেন তাকে কেও সৃষ্টি করেন নাই। স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করলো এটা একটা মূলত ভুল প্রশ্ন।
যেমন ধরুন কেও বললো সূর্য চলে কয় পা দিয়ে? উত্তর কি দিবেন? সূর্য কি পা দিয়ে চলে? সূর্য পা দিয়ে চলা তো দুরের কথা সূর্যের পা ই তো নেই। এই প্রশ্নটা যেমন ভুল তেমনি স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করলো? এটাও তেমন ভুল প্রশ্ন কারণ সূর্যের চলতে পা এর প্রয়োজন হয় না।
আমরা জানি এই মহাবিশ্বে একটা বস্তু আরেকটি বস্তুকে সৃষ্টি করতে পারে না। আমরা শুধু রুপান্তর করতে পারি যেমন আমরা ফ্যান তৈরি করলাম এখন এই ফ্যানের প্রত্যেকটা পদার্থ কি আমরা সৃষ্টি করতে পারি? কখনো পারি না এমনকি প্রত্যেকটা পদার্থ একটা আরেকটাকে সৃষ্টি করতে পারে না বরং আমরা পদার্থের একটা রুপ থেকে আরেকটা রুপে রুপান্তর করতে পারি। সুতরাং প্রমাণিত হয় একটা সৃষ্টি আরেকটা সৃষ্টি কে সৃষ্টি করতে পারে না জিনি সৃষ্টি করেন তার কোন স্রষ্টা থাকা যাবে না যদি তার স্রষ্টা থাকে তাহলে সে সৃষ্টিই করতে পারবে না। যেহেতু তিনি সৃষ্টি করেছেন সুতরাং তার কোন স্রষ্টা নাই। যদি তার স্রষ্টা থাকতো তাহলে সে সৃষ্টিই করতে পারতো না। আর যেহেতু পৃথিবী প্রমাণিত সুতরাং তার স্রষ্টা আছে যিনি সৃষ্টি করেছেন তার কোন স্রষ্টা নেই।
কোন কিছু না জানা কি স্রষ্টা না থাকার প্রমাণ হতে পারে?
না জানা কখনো না থাকার প্রমান হতে পারে না । আপনি যে বলছেন যে আপনি জানেন না এইটা কি আপনি জানেন? আপনি কোন কিছু জানেন না এই কথা সঠিক হওয়ার জন্য জরু হলো আপনার না জানাটা সঠিক কি না ? আপনি বংলাদেশের কয়টা জেলা সম্পর্কে জানেন তাই বলে কি যেই সমুস্ত জেলা সম্পর্কে আপনি জানে না সে সব জেলা কি নেই? পৃথিবীর কয় পার্সেনট আমরা জানি ? আমার না জানার উপর ভিত্তি করে কি সেগুলো ভুল প্রমানিত হবে? তাই কারো না জনার ভিত্তিতে স্রষ্টা কখনো ভুল প্রমানিত হতে পারে না।
স্রষ্টা কি বান্দার কথা শুনতে বাধ্য?
আমি একবার পাকিস্তানি নাস্তিকের সাথে বিতর্ক করতে ছিলাম সে আমাকে হটাৎ প্রশ্ন করে বসলো তোমার আল্লাহ যদি থেকে থাকে তাহলে আমার ঘরের লাইট বন্ধ করে দেখাও। আমি তখন তাকে বলেছিলাম আপনার কথামতো যদি স্রষ্টা সব কথা শুনে তাহলে তো আপনি স্রষ্টা হয়ে গেলেন আর স্রষ্টা গোলাম হয়ে গেল। তাই যুক্তির দাবি হলো স্রষ্টা আপনার কথা শুনবে না আপনাকে স্রষ্টার কথা শুনতে হবে। স্রষ্টা বান্দার কথা মানতে বাধ্য না।
নাই জিনিস কি প্রমান করা জায়?
নাস্তিকরা দাবি করে থাকে যহেতু আমরা দাবি করে থাকি স্রষ্টা নাই সুতরাং প্রমাণ করার দায়িত্ত আমাদের নয় বরং প্রমাণ করার দায়িত্ত আস্তিকদের কারণ তারা দাবি করে থাকে সষ্টা আছে । এর উত্তরে বলবো যে হ্যা আমরা যেহতু দাবি করেছি সুতরং আমরা প্রমাণ পেশ করবো কিন্তু নাই জিনিস প্রমান করাও যায় যেমন:
১/কেও দাবি করলো আমার ব্যাপারে যে আপনার পকেটে বোমা আছে আমি দাবি করলাম আমার কাছে বোমা নেই তাহলে আমি কিন্তু আমার পকেট বের করে দেখাতে পারবো যে আমার পকেটে বোমা নেই । তাই বলা জায় নাই জিনিসও প্রমান করা যায় ।
২/আমি দাবি করলাম আমার ঘড়ে টাকা নেই তাহলে আমি কন্তিু আমার ঘড় চেক করে প্রমান করতে পারমু আমার ঘরে টাকা নেই। সুতরং বলা জায় নাই জিনিসও প্রমান করা যায় ।
একাধিক স্রষ্টা হওয়ার সমস্যাবলী
একাধিক স্রষ্টা হওয়া কখনো সম্ভব না কারণ জিনি স্রষ্টা হবেন তিনি পরিপুর্ণ গুনের অধিকারি হবেন এবং পরিপুর্ণ ক্ষমতাবান হবেন তিনি কারো মুখাপেক্ষি হবেন না ।এরকম একাধিক প্রভু যদি থাকেন তাহলে এই পৃথিবী টিকে থাকা সম্ভব নয় কারন একাধিক প্রভু তারা নিজেদের মধ্যে মারাবারি করবেন । আর যদি তারা পরামর্শ করে কাজ করেন তাহলে একে অপরে মুখাপেক্ষি হয়ে গেলেন যা স্রষ্টার গুন বলে বিবেচিত হয় না। ধরুন একটি বাস যেখানে দুই যায়গায় ড্রাইভ করার ব্যাবস্থা আছে দুইজনি গারি চালানোর ক্ষেত্রে পরিপুর্ণ ক্ষমতাবান এবার দুই ড্রাইভার যদি গাড়ি চালানো শুরু করে তাহলে কি গাড়ি চলবে ? তা কখনো চলবে না । তাহলে পৃথিবী যেহতু সঠিক ভাবে চলছে তার মানে প্রমাণিত হয় স্রষ্টা একজন আছেন একাধিক নয়। যদি কেও দাবি করে দুই জন স্রষ্টা এমন যে সে যা চিন্তা করে অপর স্রষ্টাও তাই চিন্তা করে এক কথায় উভয় স্রষ্টা সব এক ধরেনের তাহলে আসলে এখানে ভিন্ন স্রষ্টা ধরা হবে না একজনি ধরা হবে তাই শুনিশ্চিত বলা যায় স্রষ্টা একজন হবেন একাধিক নয় ।
স্রষ্টার একত্ববাদের প্রমাণে যুক্তি
১/যদি দুই খোদা মেনে নেওয়া হয় তাহলে চিন্তার বিষয় হলো একজন খোদা অপর খোদা থেকে ভেদ গোপন রাখতে পারবেন কি না? যদি পারেন তাহলে দ্বিতীয় খোদা অজ্ঞ ও অনবগত হওয়ার কারণে আর খোদা থাকতে পারেন না। আর যদি না পারেন তাহলে প্রথমজন অক্ষম হওয়ার কারণে আর খোদা থাকবেন না।
২/ দুইজন স্রষ্টা হলে অবশ্যই অংশিদারো সাব্যস্ত হবে। যেমন বাপের দুই ছেলে বললেই সম্পত্তিতে অংশিদার হয়। আর একক সত্তা অংশিদার থেকে মুক্ত। তাই স্রষ্টা একাধিক হলেই অংশিদার সাব্যস্ত হয় যাবে। আর স্রষ্টা দোষ থেকে মুক্ত হতে হয়। অংশিদার একটি দোষ যা থেকে স্রষ্টা মুক্ত হতে হবে তাই একক স্রষ্টার যুক্তি প্রমাণিত হয়।
৩/বিশ্ব ব্যাবস্থাপনার দিকে যদি দেখি তাহলে দেখতে পাই পৃথিবীর যেকোনো ধারা একটি উৎসে গিয়ে শেষ হয়ে যায় রৌদ্রের লক্ষকরুন সূর্য পর্যন্ত এসে শেষ হয়ে যায়। তাপের ধারা আগুনের নিশান পর্যন্ত পৌঁছে শেষ হয়ে যায় সংখ্যার ধারা অসিম পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়া সত্যেও তা একে এসে শেষ হয়ে যায় বৃত্তের রেখা কেন্দ্রে গিয়ে শেষ হয়ে যায় সুতরাং এই মহাবিশ্ব এমন ধারায় গিয়ে শেষ হবেন জিনি একক হবেন ও একক স্রষ্টায় গিয়ে শেষ হবে।
৪/ একজন খোদা বিশ্বজগৎ পরিচালনায় যথেষ্ট হলে অন্য খোদা অপ্রয়োজনীয় ও অনার্থক। স্রষ্টা অপ্রয়োজনীয় অনার্থক হতে পারে না। আর যদি বলা হয় একজন খোদা বিশ্বজগৎ পরিচালনার জন্য যথেষ্ট নয় তাহলে তিনি অক্ষম হবেন অপর খোদা মুখাপেক্ষী হবেন। যা কোনভাবেই হতে পারে না।
৫/স্রষ্টার অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য হলো পরাভূতকারী এবং বিজয়ী হওয়া। যদি স্রষ্টা দুইজন হয় তাহলে তারা কেও না কেও বিজয়ী হবে কেওনা কেও তখন পরাজিত হবে সুতরাং কার বিজয় বা পরাজয় হওয়া স্রষ্টাকে ত্রুটির মধ্যে ফেলে দেয়। যা কখনো সম্ভব না। তাই স্রষ্টা একক হোয়াই অধিক যুক্তির দাবি রাখে।
আমার অনুমতি ছাড়া স্রষ্টা আমাকে কেন বানাইলেন?
অধিকাংশ নাস্তিকরা এটা বলে থাকেন যে আমার অনুমতি ছাড়া স্রষ্টা আমাকে কেন তৈরী করলেন। আচ্ছা বলুন তো স্রষ্টা আপনাকে সৃষ্টি করার পুর্বে আপনার কাছে কিভাবে অনুমতি নিবে? আগে আপনার অস্তিত্ব প্রমাণিত হতে হবে তখন না আপনার অনুমতি নিবে? সুতরাং এই প্রশ্নটাই মুলত একটা অবান্তর প্রশ্ন। ধরুন আপনি ঘুমিয়ে ছিলেন হটাত ঘুম থেকে জেগে দেখলেন আপনি সমুদ্রের কোন দ্বীপের মধ্যে এখন আপনি কি চিন্তা করবেন? আপনি কেন এখানে আসলেন এটা চিন্তা করবেন নাকি এখান থেকে কিভাবে উদ্ধার হবেন এটা চিন্তা করবেন? অবশ্যিই আপনি চিন্তা করবেন যে এখান থেকে আপনি কিভাবে উদ্ধার হবেন। তাই আমরা বলতে পারি যেহেতু আমরা দেখতে পাচ্ছি দুনিয়াতে আমরা চলে এসেছি তাই আমরা এখন চিন্তা করবো এখান থেকে কিভাবে চির সফলতার পথে যাইতে পারি সেটাই আমাদের আসল গবেষণা হওয়া উচিত।
অনেক ধর্মের মাঝে ইসলামের আল্লাহ কেন সত্য?
নাস্তিকরা বলে থাকে এতো এতো ধর্ম কোনটা আসলে স্রষ্টার ধর্ম? মুলত নাস্তিকেরা এই দাবিটির মাধ্যমে স্রষ্টার অস্তিত্ব অসিকার করে থাকে। এর জন্য আমরা একটা উদাহরণ দিয়ে থাকি ধরুন একটা বাচ্চা ছেলেকে ৫ জন মহিলা দাবি করলো যে এটা আমার সন্তান তাহলে কি প্রমাণিত হবে যে এই সন্তান কারো পেট থেকেই জন্ম নেয় নি? অনেক জন দাবি করা যেমন বাচ্চাটা মাতা হিন জন্ম নিতে পারে না তেমনি অনেক ধর্মের স্রষ্টার দাবির ভিত্তিতেও প্রমাণিত হয় না যে এই মহাবিশ্বের কোন স্রষ্টা নেই।
আপনি যদি পৃথিবীর অসংখ্য ধর্মের কথা চিন্তা করেন দেখবেন কত গুলো ধর্ম আছে যার সম্পর্কে আপনি জানেন? বা পৃথিবীর মানুষ সেই ধর্ম গুলো জানে না? আপনি প্রসিদ্ধ ধর্ম গুলি ছাড়া কয়টা ধর্ম গ্রন্থের নাম আপনি জানেন? আমরা জানি ধর্ম হলো মানুষের জন্য। আর যেই ধর্ম মানুষের কাছেই আসে নাই সেগুলো যে স্রষ্টা কর্তৃক নয় তা পরিস্কার বোঝা যায়। সুতরাং যেই ধর্ম ও ধর্ম গ্রন্থের কোন তথ্য আমাদের মেলেনি সেটা কিভাবে স্রষ্টা কর্তৃক ধর্ম হতে পারে? এটা কি কোন মানুষ মেনে নিবে? ইসলাম সকল মানুষের কাছেই পৌছেছে। আর কোন মানুষের কাছে যদি ইসলাম নাও পৌঁছে তবুও ইসলামের নিয়ম হলো সে যদি চিন্তা করে যে আমার একজন স্রষ্টা আছে এবং শিরোক না করে তবুও সে সফলকাম হবে। আপনি আরো অন্য ধর্ম গুলির দিকে তাকান দেখবেন প্রায় সব ধর্ম বহু ঈশ্বরবাদের ধারণা দেয় আমরা উপরে প্রমাণ করেছি বহু ঈশ্বরবাদ এর ধারণা ভুল তাই সেই ধর্মের স্রষ্টা ভুল প্রমাণিত হয়। এক মাত্র ইসলাম যেই ধর্মের ধর্মীয়গ্রন্থ একজন সত্য স্রষ্টার সন্ধান দেয়। কুরআন যেই স্রষ্টার ডেফিনেশন দেয় তা অন্য কোন প্রশিদ্ধ ধর্ম গুলো স্রষ্টা সম্পর্কে সেই ধারণা দেয় না এবং সেই ধর্মের আলোকে স্রষ্টাই প্রমাণিত হয় না। দেখে নেই আমরা স্রষ্টার ডেফিনেশন কুরআন থেকে:-
১.বলো তিনি আল্লাহ (যিনি) অদ্বিতীয়
২.আল্লাহ সবার নির্ভরস্থল
৩.তিনি কাউকে জন্ম দেননি ও তাঁকেও কেউ জন্ম দেয়নি
৪.আর তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।
স্রষ্টা কি আমাদের ধর্মহীন করে বানাতে পারেন না?
নাস্তিকদের এক দলের দাবি হলো যে আমরা স্রষ্টা মানি কিন্তু সেই স্রষ্টা প্রচলিত কোন ধর্মের স্রষ্টা না।এবং তাদের আরো দাবি হলো যে স্রষ্টা আমাদের ধর্ম ছারাই পাঠিয়েছেন সুতরাং আমরা প্রচলিত ধর্মের কোন স্রষ্টা কে মানি না৷ আমরা বলি যে দেখুন স্রষ্টা যদি ধর্ম না দেন তাহলে তিনি বিচার করবেন কিভাবে? আর যদি তিনি বিচার না করেন তাহলে অন্যায়ের ফলাফল কিভাবে দিবেন? যেমন বাংলাদেশে বিচার হয় তার মানে বাংলাদেশে আইন আছে। আর যদি স্রষ্টা বিচার না করেন তাহলে অন্যায়ের ফলাফল কিভাবে দিবেন? আর যদি তিনি বিচারের ফলাফল না দিতে পারেন তাহলে সে সঠিক ন্যায়বান স্রষ্টা হন কিভাবে? আর যদি স্রষ্টা ন্যায় বান না হয় তাহলে সে স্রষ্টা হয় কিভাবে? তাই ধর্মহীন স্রষ্টার দাবি একটি অসম্পূর্ণ স্রষ্টার প্রমাণ করে আর স্রষ্টা অসম্পূর্ণ নয়। তাই ধর্মহীন স্রষ্টা প্রমাণিত নয়। যদি বলেন বিবেক দিয়ে বিচার করবেন তাহলে বিবেক কে যদি মানদণ্ড ধরি এবং দুইজনের বিবেক যদি বৈপরিত্ত দেখা যায়? তাহলে স্রষ্টা কিভাবে বিচার করবেন? তাই ধর্মহীন স্রষ্টা যৌক্তিক ভাবে প্রমাণ হয় না
বিজ্ঞানীরা কি আস্তিক নয়?
সকল বিজ্ঞানী কোন এক যুগে স্রষ্টায় বিশ্বাসি হয়ে গেল। তার মানে কি স্রষ্টা বিশ্বাস সেই যুগে যৌক্তিক হয়ে গেল?
আবার কোন যুগে সকল বিজ্ঞানী নাস্তিক হয়ে গেল তার মানে কি সেই যুগে নাস্তিকতা যৌক্তিক হয়ে গেল? না তা কখনোই নয়। তাই বলা যায় রিচার্ড ডকিন্স যে দাবি করেছে সকল বিজ্ঞানী নাস্তিক তাই নাস্তিকতা যৌক্তিক তার এই দাবিটি ভুল যুক্তির উপর দারানো।
নাস্তিক রিচার্ড ডকিন্স দাবি করেছিল যে আধুনিক বিজ্ঞানীরা নাকি সবাই নাস্তিক আসলে এই কথাটির কোন ভিত্তি নেই । এবার আমরা আলোচনা করবো কোন কোন বিজ্ঞানীরা আস্তিক:
১/ ফ্যাংক এ্যালেন ।
জীবপদার্থ বিজ্ঞানী:এম,এ,ও,পি-এইচ,ডি,কর্ণেল. বিশ্ববিদ্যালয় ;১৯০২-১৯৪৪ পর্যন্ত কানাডার ম্যনিটোবা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীব -পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক; বর্ণদর্শন শারীর বৃত্তীয় আলোকবিদ্যা, তরল বায়ু উৎপাদন বিশেষজ্ঞ কানাডার রয়াল সোসাইটির টোরী গোল্ড মেডেল প্রাপ্ত।
২/রবার্ট মরিস পেজ্
পদার্থবিজ্ঞানী: বি ,এস -সি ,হ্যামালিন বিশ্ববিদ্যালয় ; এস-সি, জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়; অনার্স , ডি,এস-সি , হ্যামলীন বিশ্ববিদ্যলয় ,১৯২৭ থেকে ন্যাভাল রিসার্চ ল্যবরেটরী ওয়াশিংটন ডি,সি-র সংগে জড়িত।১৯৩৪-এ বিমান সনাক্ত করার জন্যে বিশ্বে প্রথম পালস রাডার প্রস্তুত করেন।
৩/মেরিট ষ্ট্যানলী কংডন ।
প্রকৃতি-বিজ্ঞানী ও দার্শনিক : পি-এইচ , ডি; এস , সি, ডি ওয়েবষ্টার বিশ্ববিদ্যালয়; এস , টি , ডি , বার্টন বিশ্ববিদ্যালয় ; ফ্লোরিডা ট্রিনিটি কলেজের মৌলিক বিজ্ঞানে সাবেক অধ্যাপক , মেডিক্যাল একাডেমী অব আমেরিকা এবং অসংখ্য অন্যান্য বৈজ্ঞানিক সংস্থার সদস্য ।
আমরা আপনাদের এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান করতে বলছি যা প্রতিটি মানুষের জন্য জরুরি
আমাদের সমাজের নাস্তিকরা প্রশ্ন করতে শিখায় এই বিষয়টি খুব ভালো বিষয় কিন্তু তাদের প্রশ্ন গুলো মুলত পক্ষপাতদুষ্ট কখনোই আপনি নাস্তিকদের প্রশ্ন নিরপেক্ষ পবেন না । সে সকল প্রশ্নই আপনাকে চিন্তা করতে বলবে যা দারা আপনি নাস্তিক হতে পারবেন । ঐ সকল প্রশ্ন আপনাকে কখনোই করতে বলবে না যা আপনি অনুসন্ধান করে সত্য পর্যন্ত পৌঁছান ।
নিম্নের প্রশ্ন এমন ভাবে বোঝার চেষ্টা করুন যাতে কোন পক্ষপাত থাকবে না ।
১/স্রষ্টা ছাড়া এই মহাবিশ্ব কিভাবে কল্পনা করা সম্ভব?এটার শেষ ফলাফল কি?
২/আমাদের জীবন কিভাবে উদ্দেশ্যহিন? আমাদের ভালো লাগা ভালোবাসা দুক্ষ বেদনা সুন্দর অসুন্দর এরকম অনুভূতির উদ্দেশ্যহীনতা কিভাবে সম্ভব?
৩/পৃথিবী জুরে এতো মায়া মোহাব্বত কেন?
৪/পাহারে কিংবা ঝর্ণার দিকে তাকিয়ে ভাবুন তো সে কিভাবে এতো চমৎকার ও বিশালতা অর্জন করলো?
৫/আমাদের মৃত্যু আছে কেন? (আমি কিন্তু ভয় দেখাচ্ছি না) জন্ম মৃত্যুর এই পদ্ধতি শেষ হয়না কেন ? আমরা এই পদ্ধতি ভাংতে পারি না কেন? মৃত্যু আমাদের সকল আসা আকাংখা দুক্ষ বেদনা বিলিন করে কিভাবে?
৬/আমরা জন্মগ্রহণ করি কেন?আমরা কি ইচ্ছা করে এসেছি?
৭/আমাদের চলার শক্তি আমাদের খাবারের হরেক রকমের ব্যাবস্থা একটা মাছে কত রকমের স্বাদ আমরা আস্বাদন করি। মাছের মাথার মাঝে এক মজা লেজের মাঝে এক মজা এতো রংঢং কিভাবে দুর্ঘটনার ফল হতে পারে?
৮/ একটা মুরগীর বাচ্চা যখন সে ডিম থেকে ফুটে বের হয় তখন তার মা মুরগীর সাথে ব্যাপক একটা ভালোবাসা তৈরী হয়। সে ডাকার সাথে সাথে চলে আসে এই প্রানী জগতে এরকম মিল মোহাব্বত কে তৈরী করলেন? এই প্রশ্নটি কি আপনাকে ভাবায় না?